Posts

Showing posts from May, 2020

আরো একটি ঝড়

পম্পা বড় হয়েছে যে পাড়ায় সে পাড়ায় থাকে সৈকত। ওদের বাড়ি দুটি এককালে একই পরিবারের ছিল। পরবর্তিকালে দু'ভাগে ভাগ ও দু'ভাগই আলাদা করে বিক্রী হয়ে যায়। ওদের বাড়ির ঢোকার দরজা দুটি পাশাপাশি সবুজ রঙের। আগের ভাইরা ভাগাভাগির পর একসাথে রঙ করিয়েছিল। তাই দরজাদুটির রঙ একই অনুপাতে ম্রিয়মাণ। মাঝে মাঝেই ভুল হয়ে যায়। ভুল পম্পারও হত। পম্পা জানত কখন সৈকত দরজার পেছনে আড়ি পেতে আছে। অবলীলায় ঢুকে পড়া এরপর একটু ধ্বস্তাধস্তি তারপরেই হাতের চেটো দিয়ে ঠোঁট মুছতে মুছতে নিজের বাড়িতে ঢুকে যেত। আজ বাইরে প্রচণ্ড ঝড়। বাবা-মা দিদাকে দেখতে গিয়ে আটকে গেছে। নইলে পম্পার আগেই ফিরে আসার কথা। ওইদিকে সৈকতের বাড়িও ফাঁকা। কাকু-কাকীমা বেড়াতে গেছেন। ফিরবেন পরের সপ্তাহে। চাবি পম্পার কাছে থাকত। বাড়ির কাছে এসে খেয়াল হয়েছে ওটা ব্যাগেই রয়ে গেছে। ব্যাগটা স্যারের বাড়ি রেখে এসেছে যাতে বইগুলি প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ভিজে না যায়। কী হবে? এদিকে লোডশেডিং, চাবি নেই, বাইরে প্রচণ্ড ঝড়। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই দরজার পাশে সৈকতের সাইকেলটা দেখতে পেল। তার মানে সৈকত ঘরেই আছে? অন্ধকারে জানালার ফাঁকা দিয়ে হলুদ আলো দেখা যাচ্ছে। বোধহয় ঘরে লন্ঠন জ্বলছে...

আমি ভালো আছি

আমি ভালো আছি ========== আমি ভালো আছি আমার ছোট বাড়ি তাই বসার ঘর থেকে খাওয়ার টেবিলে আসতে মাত্র দশ পা হাঁটলেই চলে। হাজার মাইল হাঁটার দরকার পড়ে না। আমি ভালো আছি। আমার বিছানা পাথরের নুড়ি বিছানো নয় নরম শিমূলতুলোয় মোড়া আমার গদি। পাশবালিশ আমার তুলতুলে নরম ইস্পাতের লাভাগরম রেললাইন নয়। আমি ভালো আছি। বিছানায় শুয়ে আমি মৃত্যুর গন্ধ পাই আচমকাই জেগে উঠি তারপর আবার ঘুমাই নরম পাশবালিশকে পরম আশ্লেষে জড়িয়ে। ব্যাগ মাথায় হাঁটতে হচ্ছে না আমাকে রেল লাইনে ঘুমুতে হচ্ছে না আমাকে রান্নাঘরে গরম খাবারের গন্ধ পাচ্ছি আমি ভালো আছি।। ঋজু ঘোষ, ৯ মে ২০২০, ব্যাঙ্গালোর ১৬ জন শ্রমিক প্ররিশ্রান্ত রেললাইনের ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় চিরঘুমে তলিয়ে গেলেন। আমার দেশ তুমি কি এই অভিশাপ কাটিয়ে উঠতে পারবে? 'এই মৃত্যু উপত্যকা আমার'ই দেশ। হায়!!