আরো একটি ঝড়

পম্পা বড় হয়েছে যে পাড়ায় সে পাড়ায় থাকে সৈকত। ওদের বাড়ি দুটি এককালে একই পরিবারের ছিল। পরবর্তিকালে দু'ভাগে ভাগ ও দু'ভাগই আলাদা করে বিক্রী হয়ে যায়। ওদের বাড়ির ঢোকার দরজা দুটি পাশাপাশি সবুজ রঙের। আগের ভাইরা ভাগাভাগির পর একসাথে রঙ করিয়েছিল। তাই দরজাদুটির রঙ একই অনুপাতে ম্রিয়মাণ। মাঝে মাঝেই ভুল হয়ে যায়। ভুল পম্পারও হত। পম্পা জানত কখন সৈকত দরজার পেছনে আড়ি পেতে আছে। অবলীলায় ঢুকে পড়া এরপর একটু ধ্বস্তাধস্তি তারপরেই হাতের চেটো দিয়ে ঠোঁট মুছতে মুছতে নিজের বাড়িতে ঢুকে যেত।

আজ বাইরে প্রচণ্ড ঝড়। বাবা-মা দিদাকে দেখতে গিয়ে আটকে গেছে। নইলে পম্পার আগেই ফিরে আসার কথা। ওইদিকে সৈকতের বাড়িও ফাঁকা। কাকু-কাকীমা বেড়াতে গেছেন। ফিরবেন পরের সপ্তাহে। চাবি পম্পার কাছে থাকত। বাড়ির কাছে এসে খেয়াল হয়েছে ওটা ব্যাগেই রয়ে গেছে। ব্যাগটা স্যারের বাড়ি রেখে এসেছে যাতে বইগুলি প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ভিজে না যায়। কী হবে? এদিকে লোডশেডিং, চাবি নেই, বাইরে প্রচণ্ড ঝড়। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই দরজার পাশে সৈকতের সাইকেলটা দেখতে পেল। তার মানে সৈকত ঘরেই আছে? অন্ধকারে জানালার ফাঁকা দিয়ে হলুদ আলো দেখা যাচ্ছে। বোধহয় ঘরে লন্ঠন জ্বলছে। কী করবে ভাবতে ভাবতেই ভুল করা দরজাটার কড়া ধরে অল্প ঝাকুনি দিল। বাইরে যা ঝড়।

অবশ্য ঘরেও প্রচণ্ড ঝড়ের পূর্বাভাষ।

-ঋজু ঘোষ, ২০ মে ২০২০, ব্যাঙ্গালোর

Comments

Popular posts from this blog

ভিনসেন্ট ভ্যানগখ এর সাথে

ডাচ গোল্ডেন এজ, রেমব্রান্ট ও নাইট ওয়াচ