Posts

Showing posts from March, 2020

ভিনসেন্ট ভ্যানগখ এর সাথে

Image
ভিনসেন্ট ভ্যানগখ আমার ভীষন প্রিয় শিল্পী। ভ্যানগখের ছবি দেখেই আমার পাশ্চাত্য শিল্পের সাথে পরিচয়। ভ্যানগখ কত বড় মাপের শিল্পী তা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। আমি এখানে আমার একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতি ব্যক্ত করব বলে ঠিক করেছি। তার আগে কতগুলি জানা তথ্য জানিয়ে রাখি , ১ ) ভ্যানগখ মোট ১০ বছরে মোট ৯০০ ও বেশি ছবি একেছিলেন যার মধ্যে মাত্র ১ খানা তার জীবিতকালে বিক্রি হয়েছিল। আর এখন আপনার অঢেল পয়সা থাকলেও ভ্যানগখের ছবি কিনতে পারবেন না। এখন ভ্যানগগের ছবি কিনতে চাওয়া মানে মাউন্ট এভারেস্ট কেনার ইছার মতই অবাস্তব। ২ ) ভ্যানগখ অসম্ভব ভালো লেখক ছিলেন। ছবির সমসংখক চিঠি (প্রায় ৮০০) উনি তার ছোটভাই থিওকে লিখে গেছেন। ভ্যানগখ তাঁর নিজের জীবনে তেমনভাবে পরিচিতই ছিলেন না। আর ভ্যানগখের সময় জর্জিও ভাসারির মত কোন ধারাবিবরক ও ছিল না। তাই ভ্যানগখের লেখা চিঠিগুলিই তাঁর আত্মজীবনী। থিও সারাজীবন তাঁর এই সৃষ্টিশীল পাগলাটে ভাইকে নানাভাবে সাহায্য করে গেছেন। রঙ, তুলি কেনা থেকে শুরু করে ক্রমাগত উৎসাহ দেওয়া কোনটারই কমতি ছিল না। নিজে আর্ট ডিলার হওয়া স্বত্ত্বেও নিজের ভাইয়ের ছবি বিক্রি করতে পারেন নি। আমার মনে হয় যদি সাফল্...

দেবব্রত

আজও মাঝে মাঝেই দেবব্রতকে মনে পড়ে দেব্রা আমার স্কুলের বন্ধু ছিল। আমাদের মিলের চেয়ে অমিলই ছিল বেশি দেব্রা সুন্দর তবলা বাজাত আর আমি গানই শুনতাম না দেব্রার ছিল অদ্ভুত সব কারিগরি শখ আমি যার একনিষ্ঠ পর্যবেক্ষক। এইসব করতে করতে করতেই আমি হোল্ডারে বাল্ব আর প্লাগে তার লাগান শিখে গেলাম দেব্রা আমার বসবাসের অনেক বাড়িতে আজও আলো জ্বালায় ওইভাবে এর বাইরে আমার আর কিছু শেখা হয়ে ওঠে নি তেমনই আমাদের বন্ধুত্বের সিঁড়িও আর পেরনো হয় নি  বন্ধুত্ব বাড়ে কমে না, বন্ধুত্বের কোন বার্ধক্য ও জরা নেই - আমি দেব্রার সাথে বন্ধু না হলে বুঝতামই না আমাদের কোন ঝগড়া নেই আমাদের কোন ভালোবাসা নেই আজ দেব্রা ওইসবের থেকে অনেক দূরে আমি আজও সেই পথ পাড়ি দিয়ে চলেছি আমাদের একটাই পথ দুজনের মাঝে দুরত্বটাই বেড়ে গেল হঠাৎ।। -- ঋজু ঘোষ, ১৩ মার্চ ২০২০, ব্যাঙ্গালোর  

গভীর অসুখ

আজ পৃথিবীর গভীর অসুখ আজকে পৃথিবী দুই দলে ভাগ এক যারা অসুস্থ আর যারা অসুস্থ হতে পারে এই হওয়া আর না হওয়ার মাঝখানে পড়ে সুস্থতা তার মাহাত্ম্য হারিয়েছে। ধর্ম আজ ডেকে নেয়নি তার সন্তানদের মানুষই মানুষের ডাক শুনছে মন্দির-গির্জা-মসজিদ সব দরজা বন্ধ কেন? কেউ জিজ্ঞেস করছে না। কারণ প্রার্থনার কোন নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম হয় না মায়ের কাছে সন্তানের কোন ছোঁয়াচ নেই এক গভীর গোপন ষড়যন্ত্র জ্বর হয়ে নেমে এসেছে মানুষ মানুষে বিশ্বাস হারিয়েছে দরকার ছিল আরও বেশি হাসপাতালের আজ যে বাতাস দূষিত তারও প্রয়োজন ফুরায় নি কিন্তু আজ যে সবার মাঝে থেকেও একা হয়ে গেছে তার ওষুধ, বাতাস, খাদ্যের প্রয়োজনের সাথে সাথে দরকার এক উষ্ণ কোমল স্পর্শ এলোমেলো চুলে বিলিকাটা লম্বা আঙ্গুল ঝড় জল বৃষ্টি উপেক্ষা করে অপেক্ষায় বসে থাকা একবুক ভালোবাসা।।  -- ঋজু ঘোষ, ১৩ মার্চ ২০২০, ব্যাঙ্গালোর

তুইতো ছিলি

তুইতো ছিলি অনেক আগেই যদি তোকে পেতাম একটু আগে ফিরে এলাম তোর ডাকেতেই নাহয় পালিয়ে যেতাম তোর সোহাগে আমার তোকে বাসতে ভালো একটু আগে একটু পরে অন্ধকারে একটু আলো একচিলতে মেঘদুপুরে কম ছিল না ভালোবাসায় দঁড়িয়ে আছি পথের ধারে তবে আমি কিসের আশায় শূন্য চোখে নদীর পাড়ে ভাঙছে যে ধার উঠোন পাড়ে ডাকছে আমায় আমার একা আমার সকাল ক্লান্ত ভোরে ওই যে দূরে যাচ্ছে দেখা তুই যে আমায় ভুলিয়ে দিলি আয় আঙ্গুল ধরে দু'জন চলি ।। Wriju February 14, 2020 আমার মতন খামখেয়ালি, অলস, ঘুমবিলাসী একজনের সাথে এতগুলি বছর কাটানো সহজ কথা নয়। তবু একজন তার সবকিছু ছেড়েছুঁড়ে আমার সাথে ঘর বাঁধল। শুধু ঘর বাঁধাই নয়, গোটা সংসারটাই সামলালো। মনে করা যাক আমি একটা সাইকেল চালাচ্ছি। হয়ত মনে হল চা খাই, তবু আমার সাইকেলটা আমায় ছাড়াই চলছে - এরকম অনেকবারই হয়েছে।

C/O, দেবজ্যোতি ঘোষ

C/O, দেবজ্যোতি ঘোষ ================ আজকে আমাকে কেউ আর চিঠি লেখে না, লিখলে ঠিকানা হোত C/O, দেবজ্যোতি ঘোষ আমার নাম ছাড়াই ওটা আমার ঠিকানা আমি জানি চিঠিগুলো আজো ঠিক পৌঁছাবেই ওখানে আমার একটা ঘর আছে আমার বই আছে আমি আজও ওইখানে থাকি, যে বাড়ির চারদেয়াল ছেড়ে কখনও বের হতে পারিনি সে বাড়ির ঠিকানায় আজো লেখা থাকে C/O, দেবজ্যোতি ঘোষ এছাড়া আমার কোন পরিচয় নেই আমরা সকলেই আছি, শুধু একজন নেই দু'মাস হয়ে গেল। মনে হয় এখনো তো চলছে সবই আগের মতই শুধু অসময়ে একখানা অনাথ বন্যা এসেছিল, একজন একরাশ অভিমান বুকে নিয়ে চলে গেছে সবকিছু বদলে গেছে, শুধু C/O, দেবজ্যোতি ঘোষ ছাড়া।। ঋজু ঘোষ, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ব্যাঙ্গালোর

মাতলা নদী

একটা দাঙ্গা বাধানোর অপপ্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। দাঙ্গা হয় নি। বরং একে অপরকে আগলে রেখেছে। এই অসময় আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে আমার "মাতলা নদী" আছে। যে নদীর ধার আমাদের সবার ঠিকানা। মাতলা নদী ======= মাতলা নদীর ধারে একটি গ্রাম আছে যে নদীর জলে সারা গ্রাম রান্না করে ওই গ্রামের মেয়েরা কলসি কাঁখে জল ভরতে যায় ওই গ্রামের ছেলেরা গামছা পরে স্নান সেরে ফেরে মাতলা নদীর ধারে কোন মন্দির নেই মাতলা নদীর ধারে কোন মসজিদ নেই মাতলা নদীর ধারে কোন চার্চ নেই ওই গ্রামের একটাই ধর্ম ওই ধর্মের নাম 'মাতলা নদী' মাতলা নদী ওদের জীবন মাতলা নদীর জল সবার রক্তে ওরা কয়ঘর পাশাপাশি থাকে ওরা ভুলে গেছে কী ছিল ওদের ঠিকানা মাতলার জলে একবার স্নান করলে সব পাপ পূণ্য ধুয়ে মুছে যায় মাতলার কলকল শব্দই ধ্বনি হয়ে বয় মাতলা নদী কোন ধর্ম নয় মাতলা নদী কেবল ধারক আমি মাতলা নদীর ধারে আমার ঘর বেঁধেছি আমার ঠিকানা ওই মাতলা নদীর ধার আমাকে ওখানেই চিঠি লিখো।। ঋজু ঘোষ, ৩ মার্চ ২০২০, ব্যাঙ্গালোর

সেইসব বেদনা

কখনও অসামাজিক হতে হয় , মুর্খ না হয়েও অসামাজিক হতে হয় যখন পিতা তার সন্তান হারায় তখন আমি তাকে কিভাবে ফোন করি ? ফোন করে কি বলব আমি তাকে ? তারচেয়ে বরং চুপ বসে থাকি যে বেদনা ভাগ করে নেওয়া যায় না সে বেদনার কোন সান্ত্বনা হয় না কোন মায়ের হাত হঠাৎ খালি আর রাতের ঘুমের কোন ব্যাঘাত নেই নেই কোন চিৎকার কান্নার শব্দ চারপাশে শ্মশানের নিঃশব্দ কোলাহল এমনতো ছিল না শর্ত না বুঝেই যে ভালোবাসা এসেছিল না বুঝেই সে ভালবাসা চলে গেল । সে সন্তানহারা পিতা আমার বান্ধব আমি তাকে দূর থেকে আলিঙ্গন করি।। -- ঋজু ঘোষ , ১৩ মার্চ ২০২০